যদিও মসুর ডাল পুষ্টিতে ভরপুর এবং শরীরের জন্য উপকারী, অতিরিক্ত পরিমাণে বা ভুল উপায়ে এটি খেলে কিছু অসুবিধা দেখা দিতে পারে। নিম্নে মসুর ডালের কিছু অপকারিতা আলোচনা করা হলো:
১. গ্যাস্ট্রিক বা পেট ফাঁপার সমস্যা
মসুর ডালে প্রাকৃতিকভাবে কিছু ফাইবার এবং কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা পেটের গ্যাস তৈরি করতে পারে। যাঁরা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত মসুর ডাল খাওয়া সমস্যার কারণ হতে পারে।
সমাধান: মসুর ডাল ভালোভাবে সেদ্ধ করে খান এবং অল্প পরিমাণে গ্রহণ করুন।
২. কিডনি পাথরের ঝুঁকি
মসুর ডালে অক্সালেট নামক যৌগ থাকে, যা শরীরে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিশে কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
সমাধান: কিডনির রোগীদের মসুর ডাল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩. প্রোটিন অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে
মসুর ডাল প্রোটিনসমৃদ্ধ, যা প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে সহায়ক। তবে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে লিভার এবং কিডনির ওপর চাপ পড়তে পারে। বিশেষ করে যাঁরা কম পানি খান, তাঁদের জন্য এটি সমস্যার কারণ হতে পারে।
সমাধান: প্রয়োজনের বেশি মসুর ডাল খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
৪. পুষ্টি শোষণে বাধা দিতে পারে
মসুর ডালে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে, যা আয়রন, জিঙ্ক এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলোর শোষণে বাধা দিতে পারে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে এটি বেশি পরিমাণে খেলে কিছু পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে।
সমাধান: ডাল ভিজিয়ে বা সঠিকভাবে রান্না করে খেলে ফাইটিক অ্যাসিডের প্রভাব কমানো যায়।
৫. অ্যালার্জি সমস্যা
কিছু মানুষের শরীর মসুর ডালে থাকা প্রোটিনের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে, যা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। এতে ত্বকের র্যাশ, পেটে ব্যথা বা বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
সমাধান: যদি মসুর ডাল খাওয়ার পর এমন লক্ষণ দেখা যায়, তবে খাওয়া বন্ধ করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
৬. অতিরিক্ত ফাইবার সমস্যা
মসুর ডাল ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া বা অন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফাইবার বেশি খাওয়া অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
সমাধান: প্রতিদিন ১ কাপের বেশি মসুর ডাল না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৭. উচ্চ পটাসিয়ামের সমস্যা
মসুর ডালে পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি। যাঁদের কিডনির কার্যকারিতা কম বা যাঁরা পটাসিয়াম কমানোর ডায়েটে আছেন, তাঁদের জন্য এটি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সমাধান: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মসুর ডাল খাওয়া উচিত।
উপসংহার
মসুর ডাল পুষ্টিতে ভরপুর একটি খাবার, তবে এটি খাওয়ার সময় পরিমাণ এবং প্রস্তুতির পদ্ধতির প্রতি সচেতন হওয়া জরুরি। যারা বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য মসুর ডাল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পদ্ধতিতে এবং পরিমিত পরিমাণে মসুর ডাল খেলে এর উপকারিতা উপভোগ করা সম্ভব।